নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ(হুজি) নতুন করে সংগঠিত হয়ে বাংলাদেশে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করছিল, হুজির পুরাতন সদস্যরা নতুন সদস্য সংগ্রহের জন্য কাজ করছিল বলেও জানান পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
শনিবার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদদর (হুজি) ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
গেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. ফখরুল ইসলাম , মো. সাইফুল ইসলাম , মো. সুরুজ্জামান , মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন , মো. দীন ইসলাম এবং মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন । এদের মধ্যে ফখরুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম সম্পর্কে পিতা-পুত্র।
নতুন করে সংগঠিত হয়ে বাংলাদেশে একটি বড় হামলা করার পরিকল্পনা করেছিল হরকাতুল জিহাদ। কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অর্থ লগ্নি করে সদস্য সংগ্রহ করছে বলেও জানান সিটিটিসি প্রধান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গেপ্তার ফখরুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে গাজীপুরের তামিরুল মিল্লাত মাদরাসায় দারোয়ানের চাকরি করতেন। সে বছরই তিনি বাংলাদেশ পাকিস্তানের করাচিতে যান কাজের উদ্দেশ্যে। সেখানে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মুফতি জাকির হোসেনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মুফতি জাকির হোসেন করাচির ইসলামীয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল ছিলেন এবং একইসঙ্গে তিনি আল কায়েদার সামরিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। জাকির ফখরুল ইসলামকে জিহাদের দাওয়াত দিলে সে দাওয়াত গ্রহন করেন তিনি। পরে মুফতি জাকিরের সঙ্গে তিনি একাধিকবার আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরে দীর্ঘকালীন প্রশিক্ষণে যান। সে সময় তিনি আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন ও মোল্লা ওমরের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, হুজির মুফতি হান্নানসহ একাধিক শীর্ষ ব্যক্তি গ্রেপ্তার হওয়ায় সংগঠনটি নেতৃত্বশূণ্য হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ১৯৯৮ সালে দেশে ফিরে আসা ফখরুল ইসলাম বাংলাদেশে জঙ্গি কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে নতুন সদস্য ও অর্থ সংগ্রহ এবং দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।
এ ছাড়া ফখরুল ইসলাম তার ছেলে সাইফুল ইসলামসহ অন্য হুজি সদস্যদের নিয়ে একাধিকবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যান এবং রোহিঙ্গাদের তাদের সংগঠনে ভেড়াতে মোটা অংকের অনুদান দেন বলেও জানান সিটিটিসি প্রধান।
তিনি আরও বলেন, তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিছু সাকসেস পেয়েছে। কিছু সদস্যকে তাদের সঙ্গে নিয়েছে। তাদের পরিকল্পনা ছিল পাহাড় কেন্দ্রিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করা। যারা এখনও গ্রেপ্তার হয়নি, তারা নিজেরা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছিল। তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টাকা দিয়েছে। কিন্তু কী পরিমাণ দিয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি; রিমান্ডে নিলে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।