হঠাৎ অসুস্থবোধ করায় গভীর রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাত ৩টায় তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, গুলশানের বাসায় ম্যাডাম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে আমরা দ্রুত হাসপাতালের নিয়ে এসেছি। তাকে সিসিইউতে নেয়া হয়েছে।
রাত তিনটায় পাজারো জিপে তাকে গুলশানের বাসা থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের গাড়িতে করে হাসপাতালে যান।
বিএনপি প্রধান।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসুস্থতার সংবাদ শুনে দ্রুত উত্তরার বাসা থেকে গুলশানে ছুটে আসেন এবং দ্রুত খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে প্রেরণের ব্যবস্থা করেন।
এভারকেয়ারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধায়নে খালেদার চিকিৎসা চলছে বলে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন হার্টের সমস্যার কারণে এই হঠাৎ শ্বাসকষ্টের জটিলতা দেখা দেয় খালেদার।
তিনি আরো জানান, মূল সমস্যা কী হার্টের অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে, এখন খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল।
সকালে খালেদার বিষয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করবেন চিকিৎসকরা।
২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এ নিয়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ দফায় বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হল।
এর আগে গত ৬ এপ্রিল নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে একই হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় তাকে।
এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৬ বয়সী খালেদা জিয়া। মাঝে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে কয়কে দফায় হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল তাকে।
২০২১ সালে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্ষক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।
খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠাতে কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।