দেশে এখন চলছে বোরো ধানের ভরা মৌসুম। প্রতিবছর এই সময় চালের দাম কমতির দিকে থাকে। কিন্তু এবার চিত্র উল্টো, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বড় দুই চালের বাজার নওগাঁ এবং কুষ্টিয়াতে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত।
ভরা মৌসুমে চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। কারণ চলতি মাসের শুরুতে একজন ভোক্তা যে দামে চাল কিনেছেন, মাসের শেষে এসে চাল কিনতে গেলে তাকে বেশ বড়-সড় ধাক্কাই খেতে হবে। কারণ, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চালের দাম অনেকটা বেড়েছে। সর্বশেষ গত তিন সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি তিন থেকে দশ টাকা পর্যন্ত।
দেশের বৃহত্তর চালের বাজর ঘুরে দেখো যায়, গত সপ্তাহে নওগাঁর বাজারে প্রতিকেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৫৮-৬০ টাকায় আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়, কাটারিভোগ ৬৫-৬৮ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে ৭০-৭৫ টাকা হয়েছে। এছাড়া স্বর্ণার দাম কেজিতে ৪ থেকে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৮-৫২ টাকায়।
এদিকে কুষ্টিয়ার বাজারে মিনিকেট, কাজললতা এবং আঠাশ চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। মিনিকেট ৬৩-৬৫, কাজলা ৫৩-৫৬, আঠাশ ৪৬-৪৮ টাকা।
চালের বাজার অস্থির হলেও বাজার তদারকি না থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। চালকল মালিকদের দাবি, ধানের সরবরাহ কম থাকা এবং দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দামও কিছুটা বেড়েছে।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘আমার লাইফে (জীবনে) এই ভরা মৌসুমে এভাবে মিনিকেট চালের দাম বাড়তে দেখিনি। দাম বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, বড় ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টরা (শিল্পপতিরা) হয়তো ধান ও চাল মজুত রেখেছে। এ ক্ষেত্রে তদারকি বাড়ানো দরকার।’
বাজারে চাল কিনতে এসে বিপাকে পড়া ক্রেতারা বলেন, আমাদের রোজগার কমে গেছে। চালের দাম অতিরিক্ত বেশি। সেই সঙ্গে অন্যান্য পণ্যের দামও বাড়তি। আমরা কীভাবে কিনে খাব। যে চাল ২ হাজার ৫০০ টাকা বস্তা ছিল। এখন সেটি ৩ হাজার ৩০০ টাকা বস্তা।
অতিরিক্ত মুনাফার জন্য মিলাররা চাল মজুত করার কারণেই দর বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা।