অনলাইন ডেস্কঃ
আজ ১০ জানুয়ারি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭২ সালের এই দিন পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফেরেন তিনি। জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানান। এসময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতির প্রতি সম্মান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পরে সাড়ে আটটায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় নেতারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদি।
১০ই জানুয়ারি বাঙালির জীবনে এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করে তার প্রিয় স্বদেশ, স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
আর এর মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয় পূর্ণতা লাভ করে। সেই থেকেই এই দিনটি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে উদ্ যাপিত হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বে মাত্র ৩ মাসের মধ্য নিজে দেশে ফেরে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
একাত্তরের ২৫শে মার্চ অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর পর পরই ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু। বাঙালি যখন স্বাধীনতার জন্য লড়ছে, তিনি তখন মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন পাকিস্তানের কারাগারে। চূড়ান্ত বিজয়ের পর, আন্তর্জাতিক চাপে, ৮ জানুয়ারি তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি জান্তা।
২৯০ দিন কারাবাসের পর বিশেষ ফ্লাইটে ৮ জানুয়ারি যান লন্ডনে। পরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বিশেষ বিমানে ৯ জানুয়ারি যাত্রা করেন দেশের পথে। ১০ জানুয়ারি সকালে যাত্রা বিরতি দিল্লিতে।
সেখানে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ দেশটির জনগণের কাছ থেকে পান উষ্ণ সংবর্ধনা। বক্তৃতায়, মুক্তিযুদ্ধে তাদের সহযোগিতার জন্য জানান কৃতজ্ঞতা।
পরে দূরদর্শী কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়ে ইন্দিরা গান্ধীকে অনুরোধ করেন, তার সৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে।
১০ জানুয়ারি দুপুরে ঢাকায় পৌঁছানোর পর আনন্দে আত্মহারা লাখো মানুষ বিমানবন্দর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত স্বাগত জানায় প্রাণপ্রিয় নেতাকে। বিকেল পাঁচটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রায় ১০ লাখ লোকের সামনে ভাষণ দেন বাঙালির অবিসংবাদিত এই নেতা।
বিশ্লেষকদের মতে, সদ্য স্বাধীন দেশে যে অলিখিত ভাষণটি সেদিন তিনি দিয়েছিলেন, তা ছিল রাষ্ট্রনায়কোচিত ও দিকনির্দেশনামূলক।
ইতিহাসবিদেরা আরো বলছেন, বঙ্গবন্ধু সেদিন দেশ গড়ার যে দিক-নির্দেশনা দিয়েছিলেন তা মেনেই অর্জন হতে পারে সামগ্রিক উন্নয়ন।