৭২ ঘণ্টা পার হলে ধর্ষণ মামলা না নেয়ার বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ দেয়া বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা প্রত্যাহার করেছেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছাম্মত কামরুন্নাহারকে আদালতে না বসার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
ফৌজদারী বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাকে বর্তমান কর্মস্থল না যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসাথে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণের মামলা না নেয়ার পর্যবেক্ষণ যে বিচারক দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করছেন আইনমন্ত্রী। শনিবার সুপ্রিম কোর্টে এক সভায় তিনি বলেছিলেন, এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেয়া হবে। যাতে ঐ বিচারকের বিচারিক ক্ষমতা স্থগিতের বিষয়টি উল্লেখ থাকবে।
এসময় আইনমন্ত্রী বলেন, ৭২ ঘণ্টা পরে ধর্ষণ মামলা না নেয়ার জন্য বিচারক যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিক।
বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার হোসেনের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে খালাস দেন বিচারক। পাশাপাশি, পর্যবেক্ষণে জানান, ৭২ ঘণ্টার বেশি হলে পুলিশ যেন ধর্ষণ মামলা না নেয়।
বিচারকের এমন নির্দেশনা বা পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা। প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। আদালতের এ নির্দেশনা সংবিধান ও ন্যায়নীতির পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছেন তাঁরা। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সূত্রঃ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন