রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুদের বসতবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার অন্যতম হোতা সৈকত মণ্ডল ও সহযোগী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শুক্রবার রাতে টঙ্গী থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার কথা তারা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের ভাষ্যমতে, ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্য এবং মিথ্যা পোস্টের মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয় লোকজনকে উত্তেজিত করেন সৈকত। ঘটনার দিন একটি মসজিদ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন তাঁর সহযোগী রবিউল ইসলাম (৩৬)। এর পরই হামলা চালানো হয়।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান, স্থানীয় উজ্বল ও সনাতন ধর্মাবলম্বী পারিতোষের মধ্যে অনেকদিন ধরে বিরোধ চলছিলো। এ অবস্থায় পরিতোষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট দিলেও কয়েকদিন পর তা মুছে ফেলেন। কিন্তু উজ্জ্বল সেটি ছড়িয়ে দেন। এতে সহায়তা করেন সৈকত মন্ডল।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে একটি ‘দুর্বল সময়ের’ জন্য অপেক্ষা করছিলেন সৈকত। পরিতোষের বার্তাকে কেন্দ্র করে সৈকত উসকানি ছড়ানোর পাশাপাশি নেতৃত্ব দিয়ে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন।
হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সৈকতের পেছনে কেউ ছিলেন কি না, এ বিষয়ে র্যাব কিছু বলেনি। সৈকতের রাজনৈতিক কোনো উচ্চাকাঙ্ক্ষার বিষয়েও র্যাব নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। এমনকি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে—এমন কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেছে র্যাব।
পরে সৈকতের প্ররোচনা ও নির্দেশনায় তার সহযোগী মসজিদের মুয়াজ্জিন রবিউল মাইকিং করে গুজব ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে রংপুরের সহিংসতার ঘটনা ঘটে বলে জানায় র্যাব।
সৈকত মণ্ডল রংপুরের একটি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে নিজে থেকে প্রচার করে থাকতে পারেন। তবে এ–সংক্রান্ত কোনো তথ্য–প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। সৈকত বিভিন্ন সময় ফেসবুকে নিজের সম্পর্কে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছেন। কোনো কোনো সময় তিনি নিজেকে ছাত্রনেতা দাবি করেছেন। বিভিন্ন দলের কর্মী হিসেবেও নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন। তবে এ–সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি।
সূত্রঃ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন