কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে শাশুড়ির ‘আত্মহত্যার’ ৩০ মিনিটের মাথায় পুত্রবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে পান্টি ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শাশুড়ি ওই গ্রামের মৃত বসির উদ্দিনের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন (৬০) ও পুত্রবধূ বসির উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহমানের স্ত্রী হিরা খাতুন ওরফে জোসনা (২৬)। পুলিশ ওই বাড়ি থেকে পুত্রবধূ জোসনার লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে।
এলাকাবাসী জানায়, শাশুড়ি রোকেয়া ও পুত্রবধূ জোসনার মধ্যে পারিবারিক কলহের জের ধরে গত তিনদিন উভয়ের মধ্যে কথা-বার্তা বন্ধ ছিল। এমনকি তারা দুজনই তিন দিন ধরে না খেয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে পুত্রবধূ হিরা খাতুন ওরফে জোসনা অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়িতে পল্লী চিকিৎসক এনে তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে ছেলে আব্দুর রহমান তার মা রোকেয়া খাতুন ও স্ত্রী জোসনাকে অনুরোধ করে দুজনের মধ্যে আপস মীমাংসা করিয়ে দেন।
পরে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রহমান তার মা হিরা খাতুনকে বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ফুলে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা ঘরের আড়া থেকে নামিয়ে দেখেন আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে হিরা খাতুনের আত্মহননের মাত্র আধা ঘণ্টার মাথায় পুত্রবধূ আব্দুর রহমানের স্ত্রী হিরা খাতুন ওরফে জোসনা খাতুনের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
তবে স্বজনদের অভিযোগ জোসনার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তাদের দাবি, জোসনাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন ।
কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিব হাসান বলেন, খবর পেয়ে শনিবার শাশুড়ি ও পত্রবধূর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া ছাড়া হিরা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না। তবে ওই বাড়ি থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চিরকুটটি আব্দুর রহমানের স্ত্রী হিরা খাতুন ওরফে জোসনা খাতুনের। ওই চিরকুটে লেখা রয়েছে ‘মুক্ত করে দিলাম, তুমি তোমার মাকে নিয়েই থাক। ’
পুলিশের এই তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে আগে শাশুড়ি আত্মহত্যা করেছেন। এর আধা ঘণ্টা পর পত্রবধূ জোসনার মরদেহ পাওয়া যায়। কিন্তু চিরকুটের ভাষ্য অনুযায়ী শাশুড়ির আগেই পত্রবধূর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
টুয়েন্টিফোর বাংলাদেশ নিউজ/এসকে