দেশে ইন্টারনেটভিত্তিক গেম ফ্রি ফায়ার ও পাবজি বন্ধের সুপারিশের খবরে এর বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি হয়েছে। সময় নিউজের এক জরিপে ৬৪ শতাংশ মানুষ গেম দুটি বন্ধ না করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
দেশে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে উল্লেখ করে গত শনিবার (৩১ মে) বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে গেম দুটি বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
শনিবার এ খবর প্রকাশের পর সময় নিউজের পক্ষ থেকে একটি মতামত জরিপ শুরু করা হয়। সময় নিউজের ওয়েবসাইটে শনিবার বিকেল থেকে সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ২ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ মতামত দেন।
মতামত জরিপে প্রশ্ন করা হয়, “দেশে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপনি কি এই উদ্যোগ সমর্থন করেন?” এর উত্তরে তিনটি অপশন রাখা হয়; ১. হ্যাঁ, ২. না ও ৩. মন্তব্য নাই।
সোমবার দুপুর পর্যন্ত হ্যাঁ-এর পক্ষে মতামত দিয়েছেন এক লাখ ৪ হাজার ৩২৩ জন। না-এর পক্ষে মতামত দিয়েছেন এক লাখ ৮৯ হাজার ৩৯ জন। আর মন্তব্য নাই-এ মতামত দেন এক হাজার ৬৫২ জন।
দক্ষিণ কোরিয়ার গেম ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ব্লু -হোয়েলের অনলাইন ভিডিও ২০১৭ সালে চালু হয়। এরপর থেকে এই গেমটি দ্রুত বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ২০১৮ সালে অ্যাঙ্গরি বার্ড, টেম্পল রান, ক্যান্ডি ক্রাশের মতো গেমগুলোকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন গেমের তালিকায় শীর্ষে জায়গা করে নেয় পাবজি।
অন্যদিকে চায়না প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে তৈরি করা যুদ্ধ গেম ফ্রি ফায়ার একইভাবে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে করোনা মহামারির ফলে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা এসব গেমে আসক্ত হচ্ছে।
তবে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি আপাতত বন্ধ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সাইবার-৭১ এর অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিশিষ্ট প্রযুক্তিবিদ আব্দুল্লাহ আল জাবের। তিনি বলেন, আপাতত যতটুকু তথ্য পেয়েছি এই বিষয়ে এখনও অফিশিয়াল কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আর এমন হবে না বলেই মনে হয়। কোনো সমস্যা হলে সেটা নিয়ে কাজ করে সমাধান করতে হবে। বন্ধ করে দিয়ে নয়।
আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। হুট করে কিছু বন্ধ করে দেওয়া অনেকটা অসম্ভব। যেখানে টেকনোলজির বিপ্লব হচ্ছে সেখানে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অনুচিত। প্রতিটি জিনিসের খারাপ বা ভালো দিক আছে। এটাই সাধারণ নিয়ম। এজন্য বন্ধ করে না দিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকেও অনেক বিষয় আছে। যেমন একটি অ্যাপ ব্লক করলে সেটি আবার ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের (ভিপিএন) মাধ্যমে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে। যেটা একটা অবৈধ পন্থা। বৈধ পন্থা বন্ধের বলে যদি সবাই অবৈধ পথে হাঁটে তাহলে বন্ধ করে কী লাভ?
জাবেরের তথ্য মতে, কিছু ফায়ারওয়াল সিস্টেম আছে যার মাধ্যমে ভিপিএন বন্ধ করা সম্ভব। কিন্তু বাংলাদেশে এমন প্রযুক্তি এখনও আসেনি। তাই অ্যাপ বন্ধ করলেই যে বাংলাদেশে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি বন্ধ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
সুত্রঃ সময় নিউজ