হাওর-বাওর-নদী অধ্যুষিত ইটনা উপজেলার পূর্ব গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে ডালিম মাহমুদ কার্জন।
পরিবারে খানিকটা স্বচ্ছলতা ফেরাতে স্ত্রী আর সদ্যজাত শিশু সন্তানকে বাড়িতে রেখে টেকনিক্যাল ইনচার্জের চাকুরি নেন গাজীপুরের একটি তৈরি পোশাক কারখানায়। তবে মন পড়েছিল স্ত্রী-সন্তানের কাছে। একদিকে চাকরি হারানোর ভয়, অপরদিকে সন্তানের ভালোবাসা। এমন পরিস্থিতিতে চাকরির মায়া ছেড়ে চলে আসেন বাড়িতে।
বাড়ির পাশে ধনু নদীর তীরে ইটনা বাজারে ছোট্ট একটি দোকানে শুরু করেন মুদি ব্যবসার পাশাপাশি কয়েকটি মোবাইল অপারেটরের রিচার্জ। তবে এতে খুব একটি লাভবান হতে পারছিলেন না। এমন সময় যেন আশির্বাদ হয়ে এলো ডিজিটাল সেবা নগদ। প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করেন রিচার্জের পাশাপাশি ক্যাশইন ও ক্যাশ আউটের ব্যবসা। এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি।
ডালিম মাহমুদ কার্জন বলেন, নগদের উদ্যোক্তা হিসেবে একটা ট্রেনিং নেই। এরপর নগদের একটা সিম নেই। তারপর আমি উদ্যোক্তা নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। এখান থেকে মাছের যে চালানগুলো যায় তার সবগুলো নগদের থেকে যায়। এরপর ফিডের যে ব্যবসায়ীরা আছেন তাদেরকে সুন্দরভাবে বোঝানোর পরে তারা টিটি না করে এখন আমাদের নগদের মাধ্যমে টাকা পাঠায়। নগদটা আসার পরে খরচটা কম হচ্ছে, যার কারণে লোকজন আসছে। অন্য কোম্পানিগুলো ঠিক আছে তবে খরচটা বেশি, নগদে কম। যার কারণে নগদটা তারা বেশি ব্যবহার করছে।
অল্প দিনে ধরা দেয় সাফল্য। চার্জ কম ও লিমিট বেশি হওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ীরা তার দোকানে নগদে ব্যবসার লেনদেন করায় আয় বাড়ার পাশাপাশি স্ত্রী-সন্তানকে সময় দিতে পারেন যখন-তখন। তাই তো কার্জনের মুখে যেন হাসি লেগেই আছে। আর স্বচ্ছলতার পাশাপাশি স্বজনকে কাছে পাওয়ায় খুশি তার স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান।
ডালিম মাহমুদ কার্জন আরও বলেন, আগে পরিবারকে সময় দিতে পারতাম না, পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারতাম না। এখন নগদে আসার পর সবকিছু ঠিক রাখতে পারছি। লাভও হচ্ছে। এখন আমার কাছে খুব ভালো লাগে আমি সব দিক দিয়ে খুব ভাল আছি।
কার্জনের স্ত্রী বলেন, নগদে ব্যবসা দেয়ার পর অনেক সুবিধা হইছে। আমাকে সময় দিতে পারে, বাচ্চাকে সময় দিতে পারে।
কার্জনের ব্যবসায়িক সততা ও ব্যবহারে মুগ্ধ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ঝামেলামুক্ত আর কম খরচে লেনদেন করতে পারায় নগদের প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠেন, বাজারের ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী বলেন, নগদে খরচটা কম হয়। আগে ব্যাংকে টাকা পাঠাইতাম এখন কার্জন ভাইয়ের দোকানে নগদে টাকা পাঠাই।
আরেক ধান ব্যবসায়ী বলেন, আমার কিছু টাকা আসে নগদে। এখানে টাকাটা আমি হাতের কাছে পাই। এটা আমাদের জন্য সুবিধা।
ডিজিটাল ব্যবসা নগদ কার্জনকে এনে দিয়েছে সফলতা। দিন দিন উন্নতি হচ্ছে তার ব্যবসার। তার মালিকানাধীন মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ থেকে সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা নগদের মাধ্যমে পেমেন্ট হচ্ছে। প্রতিদিন গ্রাহকদের লেনদেন হচ্ছে, ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। তার মতো জেলার হাজারো তরুণের দিন বদলের বারতা নিয়ে এসেছে ডাক বিভাগের নগদ।
সুত্রঃ সময় নিউজ